যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় অনেকের অস্বস্তি
বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে উপলক্ষ করে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে ভারতে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। এখানে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ভূমিকা, ভারতের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া এবং চীনের পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট ড. আলী রীয়াজ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক ওয়াসিফ
সমকাল: বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র কিছু নিবারণমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় ভারতের স্বার্থহানি ঘটার আশঙ্কার কথা বলা হচ্ছে। বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
আলী রীয়াজ: বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং মানবাধিকার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় ভারতের গণমাধ্যমে যথেষ্ট কথাবার্তা হচ্ছে। কোনো কোনো বিশ্লেষক একে ভারতের জন্য গুরুতর সংকট হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু ভারত কি অন্য কোনো দেশের বেলায় এ ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায়? এটা একদিকে বিস্ময়ের ব্যাপার, অন্যদিকে বোঝা যায় তারা বাংলাদেশকে কীভাবে বিবেচনা করেূ। অনেক বিশ্লেষক বলছেন, বাংলাদেশে কোনো দল বা ব্যক্তিকে ক্ষমতায় রাখার জন্য ভারতের কাজ করা উচিত। তাঁরা কিন্তু বলছেন না, বাংলাদেশের মানুষ যেন সঠিকভাবে ভোট দিতে পারে। তাঁরা বাংলাদেশের মানুষের মত কী, তার চেয়ে বেশি আগ্রহী কে ক্ষমতায় থাকলে ভারতের লাভ, সে
ব্যাপারে।
ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বহু বিষয়ে ঐকমত্য থাকলেও এবং দুই দেশ একত্রে কাজ করলেও বাংলাদেশের বিষয়টিকে যুক্তরাষ্ট্র এখন নিজের চোখেই দেখতে চাইছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রসঙ্গটা সরাসরি বাংলাদেশ হিসেবেই বিবেচনা করছে। ভারতে এই নিয়ে যাঁরা উদ্বিগ্ন, তাঁদের কি এটাই উদ্বেগের বিষয় যে, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র যার যার নিজস্ব অবস্থান থেকে দু’পক্ষের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করতে পারে, আদান-প্রদান করতে পারে? যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে যে নীতি গ্রহণ করেছে, সেটা ভারতকে খানিকটা অস্বস্তির মধ্যে ফেলেছে।
সমকাল: অস্বস্তির কারণ কী এই যে, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সমঝোতা থাকছে না? যদি তা হয়, তবে ভারতের বর্তমান সরকারের প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে?
আলী রীয়াজ: এখন পর্যন্ত ভারতের অবস্থান বলে যা মনে হচ্ছে এবং দৃশ্যত যা দেখা যাচ্ছে, তাতে ভারত এই নিয়ে প্রত্যক্ষভাবে জড়াতে আগ্রহী নয়। এ অবস্থায় ভারতের প্রত্যক্ষ কোনোরকম ভূমিকা তাদের জন্যই ক্ষতিকারক হতে পারে বলেও কেউ কেউ মনে করেন। ভারত আশা করছে, যুক্তরাষ্ট্র এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না, যা এই অঞ্চলে ভারতের স্বার্থের বিপক্ষে যায়। বড় বিবেচনায় সেটা ঠিক আছে। কিন্তু ভারতের স্বার্থ বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণ হবে না। এখন যুক্তরাষ্ট্রের বিবেচনা হলো, এটা তাদের জাতীয় স্বার্থের ব্যাপার। বাইডেন প্রশাসন গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রশ্নে যে নীতি গ্রহণ করেছে, সেখানে তারা বাংলাদেশকে এ দুই ব্যাপারে একটা উদাহরণ হিসেবে দেখতে চায়। ফলে ভারতের অস্বস্তি কতটা গুরুত্ব পাবে, তা নিয়ে সংশয় আছে।
সমকাল: বাংলাদেশের চীনা রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ বিষয়ে সরব হয়েছিলেন। কিন্তু ভারত এখন পর্যন্ত নীরব। কেন?
আলী রীয়াজ: ভারতের যে নীরবতা দেখা যাচ্ছে, সেটা হতে পারে তাদের পরিকল্পনার অংশ অথবা বাস্তবতার কারণে। আমার ধারণা, বাস্তবতার কারণেই এই নতুন প্রেক্ষিত সৃষ্টি হয়েছে। ভারত এই মুহূর্তে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে না। তবে নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে কোনো যোগাযোগ নেই, এমন মনে করা ঠিক নয়। বিশেষ করে আগামী দিনগুলোতে পরিস্থিতি যা দাঁড়াবে, তাতে কোনো না কোনোভাবে ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির মধ্যে বাংলাদেশ নিয়ে এক ধরনের আলোচনা হবে। সেটা ২০১৩-১৪ সালের মতো প্রত্যক্ষভাবে হবে কিনা সেটাই বিষয়। সে সময় বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা দিল্লিতে গিয়েছিলেন আলোচনার জন্য। এবার তেমন কিছু প্রকাশ্যে হবে না, যা হবে তা পর্দার অন্তরালেই হবে। সেরকম একটি সম্ভাবনার কথা সবাই বিবেচনায় রাখতে পারি। ভারতকে বিবেচনা করতে হবে যে, দীর্ঘমেয়াদে ভারতের স্বার্থটা কোথায়। বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের যে অসম সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, তা দীর্ঘদিন বহাল রাখা যাবে না। একটি অস্থিতিশীল বাংলাদেশ, ভারতের প্রতি এক ধরনের বিরাগমনা বাংলাদেশ ভারতের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থের অনুকূল নয়। ভারতের কোনো কোনো মহল থেকে বলা হচ্ছে, যেন এটা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক থাকা-না থাকার বিষয়। বিষয়টি মোটেই তা নয়। ভৌগোলিকভাবে এবং বিভিন্ন বিবেচনায় প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক তো থাকতেই হবে। কিন্তু সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে অসমতা তৈরি হয়েছে, সেটা বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের পক্ষে নয়, দীর্ঘমেয়াদে ভারতের জন্যও সঠিক নয়।
সমকাল: স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জনগণের ভূমিকা, রাজনৈতিক সমাজের ভূমিকা কী হওয়া উচিত?
আলী রীয়াজ: শেষ পর্যন্ত আসলে ওয়াশিংটন বা দিল্লি নয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হওয়া উচিত বাংলাদেশের মানুষেরই হাতে। বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ, সিভিল সোসাইটি, বাংলাদেশের যারা গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে উদ্বিগ্ন; তাদেরই সেই উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, কোনটা বাংলাদেশের জন্য সঠিক পদক্ষেপ হবে।
সমকাল: যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীনের কাছে বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। সেই গুরুত্ব অতীতে বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিকাশে সহায়ক হয়নি। নতুন পরিস্থিতি কী অর্থে সহায়ক হবে?
আলী রীয়াজ: বাংলাদেশ যদি একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিকশিত হয়, বাংলাদেশে যদি নতুন করে গণতান্ত্রিক ধারা তৈরি করা যায়; তবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা অনেক ফলপ্রসূ হবে। তার সুফল উত্তর-পূর্ব ভারতের মানুষও পাবে। শুধু ভারত নয়, এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলই তার সুফল ভোগ করবে। তাই শুধু ভারতের বিবেচনাই বাংলাদেশের রাজনীতির কেন্দ্রে থাকতে পারে না, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির বিবেচনাও শুধু ভারতকেন্দ্রিক হতে পারে না। এখন বাংলাদেশকে বিবেচনা করতে হবে যে, ইন্দো-প্যাসিফিক এলাকায় বাংলাদেশ কী ভূমিকা নিতে পারে। এ অঞ্চলে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, সুযোগ তৈরি হয়েছে। জাতীয় স্বার্থে বাংলাদেশকে সেটা আমলে নিতে হবে। পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে ভূরাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশের ভূমিকা ভিন্ন হবে। এটা ভারতকেও মেনে নিতে হবে। আমি আশা করব যে, ভারতের নীতিনির্ধারকরা সেখানকার সংবাদমাধ্যমের আলোচনার বাইরে গিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা করবেন। প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্কের বেলায় সমতার কথা চিন্তা করবেন এবং পরিবর্তিত ভূরাজনীতি বিবেচনায় রাখবেন। তার জন্য তাঁদের অতীতের ভূমিকা পুনর্বিবেচনা করারও দরকার হবে।
সমকাল: চীনের ভূমিকা কী হতে পারে?
আলী রীয়াজ: চীনের ভূমিকা নিয়েও কথা রয়েছে। চীন কী ধরনের ভূমিকা বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করে সেটাই নির্ধারণ করবে চীন কী ভূমিকা নেবে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বদলের কারণ নেই। ক্ষমতার হাতবদল হলেও তা হবে না। তবে আমরা শুধু রাষ্ট্রীয় সম্পর্কের কথা বলছি না। এখন যেটা দাঁড়িয়েছে সেটা হলো আদর্শিক সম্পর্ক। সেটা হলো চীন কী এখানে শুধু অর্থনৈতিকভাবে যুক্ত থাকবে, নাকি ভবিষ্যতে তারা বাংলাদেশে এমন এক ধরনের রাজনৈতিক ব্যবস্থা দেখতে চায়, যার সঙ্গে চীনের আদর্শিক মিল থাকবে। ফলে আগামী কিছুদিন চীন কী ধরনের প্রতিক্রিয়া করে তা ঘনিষ্ঠভাবে দেখার বিষয়। আমি অনুমান করি, এখানকার আগামী দিনের রাজনীতি চীনের অনুকূলে থাকবে না। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো যেভাবে অবস্থান গ্রহণ করছে, তাতে করে চীনের পক্ষে খুব বেশিদিন পর্যন্ত এখনকার মতো অনুকূল পরিবেশ উপভোগ করা সম্ভব হবে না। সে অবস্থায় চীন কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে? যতক্ষণ না ক্ষমতাসীনরা চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে আদর্শিক সম্পর্কের দিকে নিয়ে যেতে চায়, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের পক্ষে প্রত্যক্ষ প্রতিক্রিয়া দেখানোর জায়গা সীমিত।
সমকাল: বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট কি আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করতে পারে?
আলী রীয়াজ: কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব বলতে যদি আপনি বাংলাদেশের সঙ্গে অন্য দেশের টানাপোড়েন বলেন, সেটা ইতোমধ্যেই তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক এখন এক ধরনের টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক– দুটি শক্তির মুখোমুখি শিবির তৈরি হওয়া এবং তাদের মধ্যে বিরোধ-বিসম্বাদ তৈরি হওয়ার আশঙ্কা আছে কিনা, সেটা একটা প্রশ্ন। এক ধরনের আশঙ্কা অবশ্য আছে। কিন্তু সেটা নির্ভর করবে ক্ষমতাসীনদের ভূমিকার ওপর। ক্ষমতাসীনরা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে কতটা আপসরফা করতে চান, তাঁদের কতটা অধিকার দিতে চান, নিজেদের স্বার্থ তাঁরা কতদূর ছাড় দিতে চান, তার ওপরই সব কিছু নির্ভর করবে যে, এই ধরনের আশঙ্কা বাস্তব রূপ নেবে কিনা। মনে রাখবেন, এ ধরনের টানাপোড়েন জাতীয় স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর। যুক্তরাষ্ট্র যে অবস্থান গ্রহণ করেছে, তার পরিণতি নির্ভর করবে তারা সেই অবস্থান কতদূর পর্যন্ত প্রসারিত করতে চায় তার ওপর। তারা কতদূর পর্যন্ত চাপ দিতে চায় এবং ভারত বাংলাদেশ প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কতদূর পর্যন্ত সমঝোতা করতে চায়, তার ওপর। যদি সমঝোতা না হয় এবং যুক্তরাষ্ট্র নিজ অবস্থানে দৃঢ় থাকে, তাহলে ভারতের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খুব বেশিদূর পর্যন্ত সংঘাতপূর্ণ অবস্থানে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখি না।
সমকাল: সংকট সমাধানে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সংলাপের প্রস্তাবকে আপনি কীভাবে দেখেন?
আলী রীয়াজ: এখানে যেহেতু পরস্পরের মধ্যে আস্থার গুরুতর অভাব, সেহেতু তৃতীয় পক্ষ হিসেবে জাতিসংঘকে মধ্যস্থতা করতে হলে তার জন্য স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকেই জাতিসংঘে চিঠি লিখতে হবে। অন্য কেউ করলে হবে না, এটা রাজপথে সমাবেশে বলে হবে না। এই ধরনের উদ্যোগ অতীতে সাফল্য লাভ করেনি। কিন্তু ২০২৩ সালের যে পরিস্থিতি, বাংলাদেশের অর্থনৈতিকনির্ভরতা যেসব জায়গায় আছে, তাতে করে সংঘাত-সহিংসতা হলে ভঙ্গুর অর্থনীতি আরও মারাত্মক চাপে পড়বে। সেই চাপ সৃষ্টি করার জন্য কারও উদ্যোগের প্রয়োজন হবে না, রাজনৈতিক পদক্ষেপই সে ধরনের উদ্যোগের পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। ফলে কোনো না কোনোভাবে রাজনৈতিক সংকটের সমাধান করতে হবে। তার উপায় হচ্ছে একটা অবাধ, অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
আলী রীয়াজ: যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর, আটলান্টিক কাউন্সিলের অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো এবং আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট।
News Courtesy:
https://samakal.com/opinion/article/2306177365/%E0%A6%AF%E0%A7%81%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A4%E0%A7%8E%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%E0%A6%85%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%85%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF