বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির মানেটা কী?
বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ২০২৩ সালের ২৪শে মে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত নতুন ভিসা নীতি বাংলাদেশে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। যদিও নীতিটি নিজ লক্ষ্যে দ্ব্যর্থহীন, তারপরও বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনে এর বাস্তবায়নের পদ্ধতি এবং কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
কিছু দিক দিয়ে এই ভিসা নীতি দেশটির এলিট ফোর্স (র্যাব) এবং এর কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার মতো আগের পদক্ষেপগুলোর ‘ফলোআপ’ হিসেবে এসেছে। এই ধারণা থেকে অনেকেই ভাবছেন যে, সামনে আরও কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা আসবে কিনা।
নতুন নীতিতে কী বলা হয়েছে?
বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পাশাপাশি যারা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছেন তাদের সমর্থন করাটা নতুন ভিসা নীতির উদ্দেশ্য। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নতুন নীতির মাধ্যমে যারা বাংলাদেশে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বাধা দেবে তাদের ভিসা যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাখ্যান করতে পারবে।
নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ‘বাধা দেয়া’ হিসেবে কি কি বিষয় বিবেচিত হবে এবং কারা এর আওতায় আসবেন তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, সহিংসতার মাধ্যমে জনগণকে নিজেদের সংগঠনের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার প্রয়োগ করতে বাধা দেয়া এবং রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রচার করা থেকে বিরত রাখার জন্য পরিকল্পিত ব্যবস্থার ব্যবহারকে বাধা দেয়ার কাজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। নতুন নীতির আওতায় যারা আসবেন তাদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা, সরকার সমর্থক ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লু এটা স্পষ্ট করেছেন যে, এই নীতি শুধু সরকার এবং তার সমর্থকদের জন্যই প্রযোজ্য নয়, বিরোধীদের জন্যও প্রযোজ্য। যারা আদেশ দেবে তাদের ক্ষেত্রেও যে বিধিনিষেধগুলো প্রযোজ্য হবে সেটিও লু উল্লেখ করেছেন।
ওই নীতি দিয়ে কী বোঝানো হচ্ছে?
এই নীতির ঘোষণা প্রকাশ্যে সরকারকে লক্ষ্য করে দেয়া না হলেও দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে বলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে দাবি করছেন, এটি তার স্পষ্ট প্রত্যাখ্যান। এই অগ্রিম পদক্ষেপটি শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা না হলেও এর বিস্তৃত পরিধি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের জন্যই একটি সতর্কবার্তা।
নীতির বিস্তৃত পরিধি এটাই দেখাচ্ছে যে, ওয়াশিংটন সরকার ও বিরোধী উভয়ের সঙ্গে সৎ এবং নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করছে।তবে, এটি বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা নিয়ে ওয়াশিংটনের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভেরও প্রতিফলন।
সতর্ক করা হলেও উপেক্ষা করা হয়েছিল:
বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি এবং সামগ্রিক গণতান্ত্রিক পশ্চাদপসরণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ নতুন কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাব এবং র্যাবের সাতজন বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে এবং ২০২৩ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত দুটি গণতন্ত্র সম্মেলনেও যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায় নি। এইসব পদক্ষেপের পর বারবার আহ্বান জানিয়ে এবং সতর্ক করে বলা হয়েছিল যে, রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি মার্কিন এস্টাবলিশমেন্টের রাডারে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনকে ২০২৩ সালের এপ্রিলে বলেছিলেন যে, বিশ্ববাসী বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের দিকে নজর রাখছে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর ডেরেক শোলে বলেছিলেন, বাংলাদেশ সহ যেকোনো দেশে গণতন্ত্রের অবক্ষয় সেই দেশের সঙ্গে সহযোগিতার ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের ক্ষমতাকে সীমিত করে। ২০২২ সালের মার্চে রাজনীতিবিষয়ক মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড নিজের ঢাকা সফরকালে, দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের ইস্যুকে একটি মূল বিষয় হিসেবে তুলে ধরেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র জোর দিয়ে বলেছিল যে, র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে চাইলে এর সংস্কার একটি পূর্বশর্ত।
দুর্ভাগ্যবশত, এই সব আহ্বান এবং সতর্কতাকে গ্রাহ্য করা হয় নি। বাংলাদেশ সরকার মার্কিন চাপকে উপেক্ষা করে চলেছে, অবজ্ঞা প্রদর্শন করছে। এই আহ্বানগুলোকে আমেরিকাবিরোধী পপুলিস্ট (জনতুষ্টিবাদী) বক্তৃতা দিয়ে ধাঁধায় ফেলা হয়েছিল। যেমন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে ‘ভণ্ডদের আখড়া’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করছে।
ভিসা নীতি দেয়ার নেপথ্যে:
অভ্যন্তরীণ নীতি এবং বিদেশ নীতি উভয়ই যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করতে উৎসাহিত করেছে বলে মনে হচ্ছে। ওয়াশিংটনের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার জন্য তিনটি অভ্যন্তরীণ কারণ চিহ্নিত করা যেতে পারে:
১. শেখ হাসিনা সরকারের ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা। নির্বাচনের আগে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিরোধীদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা দেয়া এবং বিরোধী নেতাদের নিপীড়নের মাত্রা তীব্রতর হয়েছে। সরকার এবং তার সমর্থকরা ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো ‘ড্রাকোনিয়ান’ আইনের বেপরোয়া ব্যবহার অব্যাহত রেখেছে। দেশে এবং বিদেশে সমালোচনা সত্ত্বেও তারা এ বিষয়ে অনমনীয় অবস্থান নিয়েছে। উপরন্তু, তারা উপাত্ত সুরক্ষা আইন (ডিপিএ)- এর মতো আরও নিয়ন্ত্রক আইন প্রবর্তনের পদক্ষেপ নিয়েছে। এই আইনের প্রবর্তন বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ ও ব্যবসার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে, সরকারকে ব্যাপকভাবে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা প্রদান করবে।
২. ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত অবাধ এবং সুষ্ঠু নয় এমন নির্বাচনের সম্ভাব্য পুনরাবৃত্তি। ওই নির্বাচনকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘স্বচ্ছভাবে জালিয়াতির’ বলে অভিহিত করেছিল। অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে বিরোধী দল এবং সুশীল সমাজের সদস্যদের উদ্বেগের প্রতি সরকার এখনো উদাসীন।
৩. স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে বেসামরিক প্রশাসনের ভূমিকা, যে নির্বাচন প্রধান বিরোধী দল- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বর্জন করেছে। নির্বাচনে মূলত ক্ষমতাসীন দলের নেতারাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও, বেসামরিক প্রশাসনের সদস্যরা ক্ষমতাসীন দল কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনীত প্রার্থীদের সমর্থন করেছেন বলে মনে হচ্ছে।
ভূ-রাজনীতির খেল
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে তুমুল প্রতিযোগিতার কারণে দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক গুরুত্বের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গোঁ-ধরে থাকাটা ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনার বাইরে নয়। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক প্রসারিত এবং বহুমুখী হলেও বাংলাদেশে চীনের দৃঢ় অবস্থান নিয়ে ওয়াশিংটনে উদ্বেগ রয়েছে।
তাছাড়া, ২০১৬ সালে চীন থেকে দুটি সাবমেরিন কেনার পাশাপাশি একই বছর বাংলাদেশ বেইজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)-এ যোগ দেয়। বিআরআই কেবল বিভিন্ন দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সহযোগিতার কাঠামোই নয়, এটি চীনের প্রভাবের ক্ষেত্রকে প্রসারিত করার একটি হাতিয়ারও বটে। তাই, বাংলাদেশ-চীন সহযোগিতা শুধু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নেই। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ‘কোয়াড্রিলেটারাল সিকিওরিটি ডায়ালগ’-এ যোগ দিলে বেইজিংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এই বলে ২০২১ সালে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত লি জিমিং যে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তার মধ্যদিয়ে চীনের প্রত্যাশাই ফুটে উঠেছে।
গত ছয় মাসে চীনের পররাষ্ট্র বিষয়ক তিন জন শীর্ষ কর্মকর্তা বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। জানুয়ারি মাসে (মার্কিন) সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র বাংলাদেশ সফরের ঠিক আগে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং আশ্চর্যজনকভাবে মধ্যরাতে ঢাকায় যাত্রাবিরতি করেন। এপ্রিলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের ওয়াশিংটন সফরের একদিন আগে ঢাকা আসেন মিয়ানমারে চীনের বিশেষ দূত দেং শিজুন।
যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের বর্তমান উত্তেজনার মধ্যেই চীনের পররাষ্ট্রবিষয়ক ভাইস মিনিস্টার সুন ওয়েইডং ২৬শে মে তিন দিনের সফরে ঢাকায় পা রাখেন। চীনের গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ-এ যোগ দেয়ার বিষয়টি বাংলাদেশের বিবেচনায় রয়েছে। এর বিপরীতে, যুক্তরাষ্ট্র প্রবর্তিত ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির প্রতি ঢাকার প্রতিক্রিয়া উৎসাহজনক বলে মনে হয় না এবং বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক পশ্চিমাদের প্রত্যাশাকে সেভাবে পূরণ করতে পারে নি।
গণতন্ত্র ও মানবাধিকার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আর. বাইডেন এবং তার প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতির কথিত কেন্দ্রবিন্দু হওয়ায়, যুক্তরাষ্ট্র যে বাংলাদেশকে (এক্ষেত্রে) একটি উদাহরণ বানাতে চায় তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
এতে কাজ হবে?
যারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করেছে তাদের শাস্তি দেয়ার হাতিয়ার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার শিকার হওয়াদের তালিকায় বাংলাদেশই প্রথম দেশ নয়। এর আগে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, উগান্ডা, নিকারাগুয়া এবং বেলারুশের অনেকের ওপর বিভিন্ন আইনের আওতায় গণতন্ত্র ও নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নির্বাচনের পরে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। তা যাই হোক, আজ পর্যন্ত এই পদক্ষেপের সাফল্য সীমিত বলে বাংলাদেশের ওপর এটি ভিন্ন প্রভাব ফেলবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
বাংলাদেশে নির্বাচনের অন্তত সাত মাস আগে এই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ একটি ইতিবাচক লক্ষণ। কারণ, এর মাধ্যমে ওয়াশিংটন আগের মতো ‘নির্বাচন পরবর্তী পদক্ষেপ’-এর পরিবর্তে প্রতিরোধের জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে পারবে। ‘কাদের বিষয়ে ফলোআপ ও তদন্ত করা হবে’ এই বিষয়টি ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস কীভাবে সাজাবে এবং এ ব্যাপারে কীভাবে সিদ্ধান্ত নেবে তাও স্পষ্ট নয়। মার্কিন দূতাবাসে কাজ করার ব্যাপক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন সাবেক মার্কিন কূটনীতিক এটিকে ‘মুষ্টিমেয় কর্মীদের জন্য কঠিন এক কাজ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
এই চ্যালেঞ্জগুলো সত্ত্বেও, ভিসা নীতির ঘোষণাটি সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ওপর প্রভাব ফেলছে যারা হয় ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চান বা ইতিমধ্যেই দেশটিতে যাদের পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে অভিজাত শ্রেণির মধ্যে নিঃসন্দেহে এই চাপ অনুভূত হবে।
সামনে কী?
কেবল মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন বা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নিশ্চয়তা দেবে না। তাও, নতুন নীতিটি বাংলাদেশের রাজনীতির সম্ভাব্য গতিপথকে ওয়াশিংটন কীভাবে দেখছে সে সম্পর্কে মার্কিন মিত্রদের মতোই ঢাকাকে একটি উচ্চ ও স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে। সংক্ষেপে, এর মাধ্যমে কিছু করার জন্য প্রস্তুতির ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে। একটি অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন এবং গণতান্ত্রিক পথে প্রত্যাবর্তনের জন্য একদিকে যেমন আরও বেশি সমন্বিত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার প্রয়োজন, তেমনি নিরপেক্ষ প্রশাসনের দাবিতে বাংলাদেশের নাগরিকদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততাও প্রয়োজন।
[যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর, আটলান্টিক কাউন্সিলের অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো এবং আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট আলী রীয়াজের লেখাটি যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক থিংক ট্যাংক আটলান্টিক কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে ৬ই জুন ইংরেজিতে প্রকাশিত হয়েছে। অনুবাদ করেছেন তারিক চয়ন]
News Courtesy:
https://mzamin.com/news.php?news=59396&fbclid=IwAR3-8p5Q2Xi-LGmRNToW3iH3Hw90DQ4pC58zfDw0J0BokEoKeXQ6WVbE2xM