জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতেই রাষ্ট্র সংস্কার: আলী রীয়াজ

জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ।
তিনি বলেছেন, “সংস্কার কমিশনগুলোর উদ্দেশ্য- বাংলাদেশে এমন একটা ব্যবস্থা তৈরি করা, যাতে করে পুনরায় কোনো অবস্থাতে ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে; যাতে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়, জনগণ যেন বুঝতে পারে তাদের অধিকার সুরক্ষিত আছে। তার প্রেক্ষাপটে সংবিধান, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
সোমবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার যে ১১টি কমিশন গঠন করেছে, তার মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করছে ঐকমত্য কমিশন।
আলী রীয়াজ বলেন, “আমাদের সামনে সুযোগ এসেছে- আমরা সকলে মিলে যেন এমন ব্যবস্থা তৈরি করতে পারি যাতে কাউকে এ ধরনের (ফ্যাসিবাদী) অভিজ্ঞতার মধ্যে না যেতে হয়। সবাই যেন তাদের অধিকার ভোগ করতে পারেন।
“মানুষ যেন কথা বলতে পারেন, জীবনাচরণের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি না হয়; গুমের শিকার না হয়, বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার না হয়, অন্যায়ভাবে নির্যাতিত না হয়, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে প্রত্যেককে তাদের অধিকার সুরক্ষার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।“
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার ও ইফতেখারুজ্জামান।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের তরফে সিনিয়র নায়েবে আমির ইউসুফ আশরাফীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলে আছেন মহাসচিব জালাল উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশের হাল ধরা অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে দুই ধাপে ১১টি কমিশন গঠন করে।
কমিশনগুলোর সুপারিশ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়। সেদিন ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপিসহ সবগুলো রাজনৈতিক দলের প্রথম বৈঠক হয়।
এরপর পাঁচটি সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মতামত জানতে চায় ঐকমত্য কমিশন। ৩৪টি দল তাদের মতামত তুলে ধরে, যাদের সঙ্গে এখন আলাদা করে বৈঠক করছে কমিশন।
News Courtesy: