বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম, মূলনীতি পরিবর্তনসহ যেসব সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান আদর্শ এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের যে জনআকাঙ্ক্ষা, তার প্রতিফলন হিসেবে আমরা রাষ্ট্রের পাঁচটি মূলনীতি সুপারিশ করছি,

গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশকে একটি কার্যকর গণতন্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সংবিধান সংস্কার কমিশন বুধবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে বেশকিছু প্রস্তাবনা দিয়েছে, যেখানে দেশটির সাংবিধানিক নাম ও রাষ্ট্রীয় মূলনীতিসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার সুপারিশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের বর্তমান সাংবিধানিক নামে থাকা 'প্রজাতন্ত্র' ও 'গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ' শব্দগুলো বাদ দিয়ে সেখানে 'নাগরিকতন্ত্র' ও 'জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ' নাম ব্যবহার করার সুপারিশ করেছে কমিশন।

"বাংলাদেশকে যেভাবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ বলা হয়, তার মধ্যে আসলে যে প্রজাতন্ত্রের কথা হয়, সেটায় আমরা দ্বিমত পোষণ করেছি। আমরা বলেছি, বাংলাদেশের পরিচিত হওয়া উচিত 'জনগণতান্ত্রিক বাংলাদেশ'," বুধবার সাংবাদিকদের বলেন কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

সংবিধানে 'বাংলাদেশের জনগণকে জাতি হিসেবে বাঙালি' উল্লেখ করে যে বিধানটি রাখা হয়েছে, সেটি বিলুপ্ত করে দেশটির নাগরিকদের 'বাংলাদেশি' হিসেবে পরিচয় দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

সেই সঙ্গে প্রস্তাব করা হয়েছে রাষ্ট্রীয় মূলনীতি পরিবর্তনের।

বর্তমান সংবিধানে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে বলা হয়েছে- জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।

এগুলোর পরিবর্তে নতুন মূলনীতি হিসেবে 'সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ এবং গণতন্ত্র'র কথা সুপারিশ করা হয়েছে।

"১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান আদর্শ এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের যে জনআকাঙ্ক্ষা, তার প্রতিফলন হিসেবে আমরা রাষ্ট্রের পাঁচটি মূলনীতি সুপারিশ করছি," বলেন অধ্যাপক রীয়াজ।

বর্তমান এককক্ষ বিশিষ্ট সংসদকে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। বাড়াতে বলা হয়েছে সংসদের আসন সংখ্যা।

এছাড়া সরকার ও জাতীয় সংসদের মেয়াদ এক বছর কমিয়ে চার বছর করার সুপারিশ করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির মেয়াদ রাখতে বলা হয়েছে চার বছর। রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন ইলেক্টোরাল কলেজ বা নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটের মাধ্যমে। একই ব্যক্তি দুবারের বেশি রাষ্ট্রপতি থাকতে পারবেন না বলে সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী পদে দুই বারের বেশি না থাকা, সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ন্যূনতম বয়স ২১ বছর করা এবং সংসদের বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার বানানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

একজন সংসদ সদস্য প্রধানমন্ত্রী পদে থাকলে দলীয় প্রধান ও সংসদ নেতা হিসেবে থাকতে পারবেন না- এমন প্রস্তাব করেছে কমিশন।

একই সঙ্গে, সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোট পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং সংবিধানের বিতর্কিত ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করার পরামর্শ দিয়েছে কমিশন।

 

News Courtesy:

BBC Bangla | January 15, 2025

 

 

An unhandled error has occurred. Reload 🗙