ভূরাজনীতি ও জোটের নতুন মেরুকরণ: কোন পথে বিশ্ব?

ভূরাজনীতি ও জোটের নতুন মেরুকরণ: কোন পথে বিশ্ব?

নতুন মেরুকরণের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের ভূরাজনীতি৷ তৈরি হচ্ছে নতুন ধরনের ‘অলিখিত' জোট৷ অনিশ্চয়তা আর সংঘাতের শঙ্কা বাড়াচ্ছে এমন পরিস্থিতি, যার প্রভাব থেকে মুক্ত নয় বাংলাদেশও৷

বৈশ্বিক ভূরাজনীতির নতুন মেরুকরণ কোন দিকে যাচ্ছে তার আভাস মিলছে সাম্প্রতিক এমন নানা ঘটনাপ্রবাহে৷ বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেকদের কারো কাছে নতুন স্নায়ু-যুদ্ধ, কারো কাছে এক মেরুকেন্দ্রিক বিশ্ব থকে বহু মেরুকেন্দ্রিক বিশ্বের পথে নতুন 

দেড় দশক আগেও উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের দেয়া নিষেধাজ্ঞায় পশ্চিমা বিশ্বের সাথে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনও সমর্থন জানিয়েছিলেন৷ সেই তিনিই ২৪ বছর পর পিয়ংইয়ংয় সফরে গিয়ে রাজকীয় সংবর্ধনা পেলেন৷ উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সাথে করেছেন নতুন সামরিক চুক্তি৷ সেখানে বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে কোনোটি হামলার শিকার হলে তারা একে অন্যকে সাহায্য করবে৷ এ নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো৷

ঠিক তার আগের সপ্তাহে রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদের মুনাফা থেকে ইউক্রেনকে ৫০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দেন জি সেভেনের নেতারা৷ সেই সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তা করার বিষয়ে চীনকেও সাবধান করেন৷ জবাবে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন পুটিন, আর ‘ঔদ্ধত্য' বলে অভিহিত করেছে চীন৷ 

বৈশ্বিক ভূরাজনীতির নতুন মেরুকরণ কোন দিকে যাচ্ছে তার আভাস মিলছে সাম্প্রতিক এমন নানা ঘটনাপ্রবাহে৷ বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেকদের কারো কাছে নতুন স্নায়ু-যুদ্ধ, কারো কাছে এক মেরুকেন্দ্রিক বিশ্ব থকে বহু মেরুকেন্দ্রিক বিশ্বের পথে নতুন যাত্রা৷

যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজ মনে করেন, বিভিন্ন ভারসাম্যের যেই পরিস্থিতি এতদিন ছিল, সেখান থেকে পৃথিবী এখন ভিন্নপথে অগ্রসর হচ্ছে৷ নতুন ধরনের মেরুকরণ হচ্ছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা যেটাকে মাল্টিপোলার ওয়ার্ল্ড বলি, সেই পরিস্থিতির সূচনা হয়েছে দীর্ঘদিন যাবৎই৷ বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন দেশ তাদের নিজের অবস্থানকে শক্তিশালী করছে৷ এক ধরনের অলিখিত জোট তৈরি হচ্ছে৷ এর একটা উদাহরণ হচ্ছে রাশিয়া, চীন, উত্তর কোরিয়া এবং সাম্প্রতিক সময়ে পুটিনের ভিয়েতনাম সফর থেকে মনে হচ্ছে তারাও হয়ত এতে যোগ দেবে৷''

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে দুই পরাশক্তির মধ্যে শুরু হয় ক্ষমতা ও আধিপত্য বিস্তারের লড়াই৷ এর একদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো, অন্যদিকে সোভিয়েত ইউনিয়নকে কেন্দ্র করে ওয়ারশ' প্যাক্টের অধীনে থাকা দেশগুলো৷ সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে অনেকটা এক মেরুকেন্দ্রিক বিশ্বের যাত্রা শুরু হয়৷ অর্থনীতি, প্রযুক্তি থেকে শুরু করে সামরিক ক্ষেত্রে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্ব একচ্ছত্র আধিপত্য দেখায়৷ কিন্তু সেই পরিস্থিতি ক্রমশ বদলে যাচ্ছে৷

প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ বিশ্বের ১২০টি দেশের শীর্ষ বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত হয়েছে চীন৷ পূর্ব এশিয়া থেকে ইউরোপ পর্যন্ত ১৫৫টি দেশ চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে স্বাক্ষরকারী৷ জি-সেভেনকে পেছনে ফেলে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও সাউথ আফ্রিকাকে নিয়ে গঠিত ব্রিকস বৃহৎ অর্থনৈতিক জোটে পরিণত হয়েছে৷

সামরিক শক্তিতে এগিয়ে থাকলেও সিরিয়া, আফগানিস্তানের পরিণতি মিত্রদের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্যতাকে কমিয়ে দিয়েছে বলে মনে করেন অনেকে৷ জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদে ইউক্রেন যুদ্ধ বা গাজা নিয়ে ভোটে একসময়ের অনুসারী দেশগুলোকে তারা পাশে পাচ্ছে না৷ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দেশ বিপক্ষে ভোট দিচ্ছে, নয়ত ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকছে৷ নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভারত, চীনের মতো বড় দেশগুলোর কাছে রপ্তানির মাধ্যমে তেল বিক্রি থেকে আয় অব্যাহত রাখতে পেরেছে রাশিয়া৷

বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন এই পরিস্থিতিকে দেখছেন নতুন বাস্তবতা হিসেবে৷ তিনি বলেন, ‘‘বার্লিন ওয়ালের পতনের পর যে পরিস্থিতি হয়েছিল তা আর নেই৷ রাশিয়া যতটা খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে ছিল এখন তা নয়৷ চীন এক সময় দারিদ্র্যের মধ্যে ছিল, কম ক্ষমতাধর দেশ ছিল৷ এখন প্রতিনিয়ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পাল্লা দিচ্ছে ক্ষমতা ও শক্তির দিক থেকে৷''

‘‘সব মিলিয়ে এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথায় পৃথিবীতে সবকিছু ঘটে না, যেটা একসময় ঘটতো,'' যোগ করেন তিনি৷

গণতন্ত্র ও ইউরোপের সংকট

বৈশ্বিক প্রভাব বলয়ের ক্ষেত্রে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গণতন্ত্র গুরুত্বপূর্ণ উপাদান৷ কিন্তু সেখানেও নতুন সংকট দেখা দিয়েছে৷ ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ফিউচার অব ডেমোক্রেসির জরিপ অনুযায়ী, ১৯৯০ এর দশকের পর সাম্প্রতিক বছরে গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্বের মানুষের অসন্তুষ্টি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে৷ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য কিংবা অস্ট্রেলিয়াতেও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি অসন্তুষ্টি এক তৃতীয়াংশ বেড়েছে৷

ইউরোপে দক্ষিণপন্থি বা উগ্র ডানপন্থিদের জনপ্রিয়তা বেড়েছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদ্য পার্লামেন্ট নির্বাচনে ফ্রান্সে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছে কট্টর ডানপন্থী দল আরএন৷ জার্মানিতে রক্ষণশীল সিডিইউ/সিএসইউ-এর পরই ভোটের হার বেশি কট্টর ডানপন্থি এএফডির৷ হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ায় এরইমধ্যে সরকার চালাচ্ছে ডানপন্থিরা৷

জাতীয়তাকে পাশ কাটিয়ে আঞ্চলিকতার উপর জোর দিয়ে গড়া ইইউ-র অস্তিত্ব কি তাতে হুমকিতে পড়বে? অধ্যাপক আলী রীয়াজ অবশ্য এখনই তেমন শঙ্কা দেখছেন না৷ কারণ, বহুপাক্ষিক সংগঠনের প্রতি ডানপন্থিদের আপত্তি থাকলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনৈতিক বিকল্প তাদের সামনে নেই৷ ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ব্রিটেন যে সংকটে পড়েছে সেটিও এক্ষেত্রে তাদেরকে নিরুৎসাহিত করবে বলে মনে করেন তিনি৷ তার মতে, আদর্শগত দ্বন্দ্ব থাকলেও ইইউ'র সদস্যদেশগুলো কোন না কোনভাবে রাশিয়ার সঙ্গে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সম্পর্ক রাখতে চায়৷ আর সেটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য ভবিষ্যৎ সংকটের কারণ হতে পারে৷ 

সংঘাতের পৃথিবী: ক্ষমতাধরদের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা কতটা?

বিশ্বের নানা প্রান্তে ঘটে চলা সংঘাতের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এসিএলইডি৷ তাদের সূচক অনুযায়ী, ২০২৩ সালে আগের বছরের চেয়ে বিশ্বে সংঘাত বেড়েছে ১২ শতাংশ আর ২০২০ সালের তুলনায় বেড়েছে ৪০ শতাংশ৷ ২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত পৃথিবীর প্রতি ছয়জন মানুষের একজন সংঘাতময় পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন৷

এর মধ্যেই দেশগুলো ক্রমাগত তাদের সামরিক ব্যয় বাড়িয়ে চলছে৷ সুইডেনভিত্তিক সংস্থা সিপ্রির তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে ২০২৩ সালে সামরিক খাতে ব্যয় তার আগের বছরের চেয়ে প্রায় সাত শতাংশ বেড়েছে, ২০০৯ সালের পর যা সর্বোচ্চ৷

ন্যাটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনব্যার্গ জানিয়েছেন, তাদের ৩২ সদস্যের মধ্যে ২৩ টিই চলতি বছর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী  সামরিক খাতে জিডিপির দুই শতাংশ ব্যয় করতে পারে৷ এই সংখ্যা হবে গত বছরের চেয়ে ১৩টি বেশি৷

সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারাও যুদ্ধের প্রস্তুতির কথা বলছেন৷ পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টুস্ক বলেছেন, ইউরোপ ‘প্রাক যুদ্ধ যুগে' আছে৷ প্রায় একই কথা বলেছেন ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী৷ আর জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী তো দেশটির জনগণকে ২০২৯ সালে মধ্যে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার কথাই বলেছেন৷ বড় ধরনের কোনো যুদ্ধ কি তাহলে আসন্ন?

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘‘পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে ইউরোপের পক্ষ থেকে যে উদ্বেগগুলো প্রকাশ করা হচ্ছে তাকে আমরা বাদ দিতে পারি না৷ কিন্তু প্রত্যক্ষ সংঘাত বা যুদ্ধের আশঙ্কা আমি দেখি না৷''

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বড় দেশগুলোর কোনটিই তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থের জন্য প্রত্যক্ষ সংঘাতে জড়াতে চাইবে না৷ তার বদলে প্রক্সি ওয়ার বা ছায়াযুদ্ধ বিস্তৃত হবে৷ তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়ার এখন যারা নেতৃত্বে তারা চাইছে ইউরোপের মধ্যেই যদি প্রক্সি ওয়ার তৈরি করা যায় তাহলেই তাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থ বেশি৷ অন্যদিকে, ইরান যেহেতু আঞ্চলিকভাবে তার ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায় এবং ইসরায়েলের সাথে তার প্রায় প্রত্যক্ষ সংঘাত আছে, সেহেতু তারাও চাইবে ইউরোপে এ ধরনের অস্থির পরিস্থিতি থাকলে তাদের যে উদ্দেশ্য সেটা অর্জন করা সম্ভব হবে৷''

পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতে সংঘাত নিরসনে জাতিসংঘের ভূমিকাও ক্রমাগতভাবে শিথীল হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন তিনি৷ কেননা, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের উপর পশ্চিমা বিশ্বের একসময় যে প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ ছিল তা সীমিত হয়ে এসেছে৷ সেখানে শক্তিশালী নয় এমন দেশগুলো বা গ্লোবাল সাউথের ভূমিকা সুস্পষ্ট হয়েছে৷ কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদে দুইটি পরস্পর বিরোধী শক্তির কারণে জাতিসংঘ কার্যকারীতা হারিয়েছে৷

কোন মেরুতে ভারত ও বাংলাদেশ?

ভূরাজনীতির এই মেরুকরণে ভারতের অবস্থানটি ব্যতিক্রম৷ যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু হিসেবে পরিচিত হলেও রাশিয়ার সাথেও তারা সুসম্পর্ক বজায় রাখছে৷ অন্যদিকে চীনের সাথে দ্বন্দ্ব থাকলেও ব্রিকসের সদস্য হিসেবে আছে দুই দেশই৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বিশ্ব রাজনীতিতে যে মেরুকরণ হচ্ছে, তাতে রাশিয়া, চীন, ভারত- এদেরকে আপনি একটা মেরুতে ফেলতে পারেন৷ আবার দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতির ক্ষেত্রে এটা আবার ভিন্ন৷ দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত একই বলয়ে অবস্থান করছে৷ এখানে রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সম্পর্ক খুব সহজভাবে ব্যাখ্যা করা যায় না৷’’

বৈশ্বিক রাজনীতির এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্যেও চ্যালেঞ্জ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা৷ ড. তানজিম উদ্দিন খান মনে করেন,  বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকার ‘বৈধতার জন্য' উন্নয়নের উপর জোর দিচ্ছে৷ এজন্য যার কাছ থেকে তারা অর্থ সহায়তা পাবে তার দিকেই ঝুঁকবে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা যদি  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতকে বিবেচনায় রেখে বলি যে, বাংলাদেশের অবস্থান কোন দিকে যাবে তা নির্ভর করছে কে বেশি ইনসেনটিভ অফার করতে পারবে বাংলাদেশকে, পাবলিক গুডস অফার করতে পারবে বাংলাদেশকে- তার ওপর বাংলাদেশ তার দিকেই ঝুঁকবে আসলে৷ সেটা যে চীনকেন্দ্রিক হবে না তা বলা যায় না৷'' সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কেমন হবে তা সময়ই বলে দেবে৷

বাংলাদেশের উপর মেরুকরণের প্রভাব রাজনীতি ও অর্থনীতি দুই ক্ষেত্রেই পড়তে পারে বলে মনে করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নে উগ্র জাতীয়তাবাদী শক্তিগুলো ক্ষমতাসীন হলে সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংকুচিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করেন তিনি৷ বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৪৮ শতাংশই এখন আসে সেখান থেকে৷   

নতুন করে যেসব জোট তৈরি হচ্ছে তাদের রাজনৈতিক আদর্শের দিক থেকে আলাদা করে দেখান বিশ্লেষকেরা৷ আলী রীয়াজ দেশগুলোকে অভিহিত করছেন ‘অগ্রণতান্ত্রিক' বা ‘স্বৈরাচারী' দেশ হিসেবে৷ সেখানটাতে বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ দেখেন তিনি৷ বলেন, ‘‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে এক ধরনের কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা তৈরি হয়েছে৷ তাদেরকে তখন এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা এই কর্তৃত্ববাদী যেই বৃহত্তর অ্যালায়েন্স তাতে যুক্ত হবেন কিনা, এবং সেটার পরিণতি হবে অভ্যন্তরীণভাবে বাংলাদেশের রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, নাগরিক অধিকারগুলো যাও সামান্য আছে সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ কার্যত একটি একদলীয় ব্যবস্থা তৈরি হতে পারে৷ ফলে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দুই দিক থেকেই চাপের সম্ভাবনা আছে৷''

কোন দেশই মেরুকরণের এই বৈশ্বিক টানাপোড়েনের বাইরে থাকতে পারবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা৷

News Courtesy:

DW | June 21, 2024

 

 

 

 

An unhandled error has occurred. Reload 🗙