সবাইকে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব মেনে নিতে হবে এমনটা হলে কিভাবে হবে? :প্রশ্ন সালাহ উদ্দিনের

সবাইকে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব মেনে নিতে হবে এমনটা হলে কিভাবে হবে? :প্রশ্ন সালাহ উদ্দিনের

সবাইকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব মেনে নিতে হবে এমনটা হলে ঐক্যমত্য কিভাবে হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের নিয়ত কী? সবাইকে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের প্রস্তাব মেনে নিতে হবে এই যদি নিয়ত হয় তাহলে কী ঐক্যমত্য হবে?
আমরা আলোচনা করছি, কাছাকাছি আসছি জাতির জন্য যেটা মঙ্গল হবে সেটা আমরা ধারণ করবো। এভাবেই আমরা এই সংস্কারের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাবো এবং এই সংস্কার তো আজকেই শেষ হবে না। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। গতকাল শনিবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ রিসার্চ এনালাইসিস নেটওয়ার্ক (ব্রেইন) শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম স্মারক প্রকাশনা উপলক্ষ্যে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশে আমরা এখন সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। সংস্কার এখন এমন অবস্থা হয়েছে আমি সংস্কৃতি উপদেষ্টাকে বলছিলাম, একটা কবিতাই লিখে ফেলেন, ‘হে সংস্কার তোমাকে পাওয়ার জন্য, আর কতকাল আলাপ আলোচনা করিবে, খানা-পিনা খাইবে সংস্কার করার জন্য’।”

সংস্কার কোনো বাইবেল নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই সংস্কার এমনভাবে তারা (জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন) করতে চাচ্ছেন যে, সংবিধানে আমরা এমন সংস্কার ঢুকাব কেউ যেন আর এই সংস্কার বিলুপ্ত না করতে পারে। সেটা তো বাইবেল নয়, ধর্মগ্রস্থ নয়। আমরা এমন সংস্কার করব যেই সংস্কার ১০/২০ বছর পরে আপনাদের হাত ধরে, নতুন প্রজন্মের হাত ধরে নতুন চাহিদার ভিত্তিতে আবার সেটা পরিবর্তন হতে হবে, সেটাই হচ্ছে সংস্কার।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সংবিধান কোনো ধর্মগ্রন্থ নয়। আওয়ামী লীগ সংবিধানের সেভেন এএমডি বিলুপ্ত করেছিলো যে সংবিধানের প্রিয়াম্বেল, প্রথম ভাগ, দ্বিতীয় ভাগ, তৃতীয় ভাগ শুধু ১৪১ ছাড়া এবং তফসিলের পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম এগুলো পরিবর্তন করা যাবে না, যেন এটা একটা ধর্মগ্রস্থ। কিন্তু ভবিষ্যত পার্লামেন্টারিয়ানদের অধিকার, বর্তমান পার্লামেন্ট বা বিদ্যমান পার্লামেন্ট কখনো বন্ধ করতে পারে সেটা পার্লামেন্টের আইন, সারা পৃথিবী ব্যাপী। আওয়ামী লীগ তো নিজেই একটা আইন। সুতরাং তারা যাহাই বলিবে তাহাই সত্য, ওটা ওইয়ের মতো যে, তুমি যা লিখেবে তাহাই সত্য, অতএব তোমার জন্ম হওয়ার আগে, আমি এধরনের কথা বলব না, বললে সমালোচনা হবে। আমি বলেছিলাম যে, তুমি লিখে যাও, তুমি যাহা লিখেবে তাহাই সত্য। এটাই ছিলো আওয়ামী লীগের থিওরি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, কিন্তু সেটা টিকে না, কখনই টিকে না। এখন আমরা সংবিধান সংস্কারের কথা বলছি, বিভিন্ন আইন সংস্কারের কথা বলছি, আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। এই সংস্কারের মূল প্রবক্তা তো বিএনপি। আমরা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হওযার দেড় বছর আগে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি। আমাদের ৩১ দফা বাংলাদেশের মানুষের কাছে, রাজনৈতিক মহলে একটা রাজনৈতিক মহাকাব্যে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, এখন এই সংস্কার আমরা যেন এইভাবেই করি আমরা প্রত্যেকেই যেন সংস্কার বাস্তবায়ন করে যেন আমরা আরও এক জিন্দেগী বাঁচতে পারি সেই সংস্কার আমরা চাই। আমরা ৩১ দফাতে এমন সব উইন্ডোজ ওপেন করে রেখেছি যেখানে জাতির জন্য, জনগণের জন্য যা কিছুই কল্যাণকর হবে সেই সমস্ত সংস্কার আমরা ধারণ করব। আমরা রিজিট নই। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরে প্রথম রাষ্ট্রীয় সংস্কার হয়েছে। জিয়াউর রহমানের সৎ কর্মময় জীবনের কথা তুলে ধরে তার আদর্শ অনুসরণ করার জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান সালাহউদ্দিন আহমদ।

এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে জিয়াউর রহমানের ওপরে একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ওপর সংকলিত স্মারক গ্রন্থ এবং জিয়াকে নিয়ে তৈরি ইন্টারনেট আর্কাইভ ও স্মারক গ্রন্থের উদ্বোধন করেন সালাহ উদ্দিন আহমদ।

ব্রেইনের সাঈদ আবদুল্লাহ‘র সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী, প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মাহদী আমিন, স্বনির্ভর বিষয়ক সহ-সম্পাদক নিলোফার চৌধুরী মনি, সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্য চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস, লেখক মুসা আল হাফিজ, ভয়েস ফর রিফর্ম প্ল্যাটফর্মের সহ-আহ্বায়ক ফাহিম মাশরুর, কবি তুহিন খান এবং জিয়াউর রহমান স্মারক গ্রন্থের ওপর সুবাইল বিন আলম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। 

 

News Courtesy:

Ittefaque | June 25, 2025

An unhandled error has occurred. Reload 🗙